ইরান ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে কাজ করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া একজন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। সোমবার (১৬ জুন) ইরানের আধা-সরকারি ফার্স নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য জেরুজালেম পোস্ট।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ওই ব্যক্তির নাম ইসমাইল ফেকরি। ইরান সরকার দাবি করেছে, তিনি ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস করছিলেন।
ফেকরির বিরুদ্ধে অভিযোগ
ইরান জানায়, ইসমাইল ফেকরি সরাসরি দুজন মোসাদ এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করতেন। এসব তথ্য জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল বলেও উল্লেখ করেছে কর্তৃপক্ষ।
দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ জানায়, ফেকরি গত বছরের ডিসেম্বরে গ্রেফতার হন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে, সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এরপর ২০২৫ সালের ১৬ জুন সকালে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে এটি তৃতীয় মৃত্যুদণ্ড
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরানে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে এটাই তৃতীয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো। ইরান সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অভ্যন্তরে ‘অবৈধ গোয়েন্দা কার্যক্রম’ পরিচালনার অভিযোগ বারবার করে আসছে এবং এমন কার্যক্রম কঠোর হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: “কাশিম বশির” মিসাইল হতে পারে ইসরায়েলের নতুন মাথাব্যথার কারণ
তেহরানে আরও মোসাদ এজেন্ট গ্রেফতার
এদিকে, ইরান আরও জানিয়েছে, একই দিন তেহরানের ফাশাফোয়েহ জেলা থেকে আরও দুইজন মোসাদ এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইরানি গোয়েন্দা বাহিনীর দাবি, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য, ড্রোন সরঞ্জাম এবং গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রযুক্তি জব্দ করা হয়েছে।
এই অভিযানে ইরান সরকার দাবি করছে, তারা মোসাদের একটি সক্রিয় চক্রের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে এবং এটি দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ইরান-মোসাদ সম্পর্ক উত্তপ্ত
বিগত কয়েক বছর ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় উভয় দেশের গোয়েন্দা সংস্থা একে অপরের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি এবং হামলার অভিযোগ করে আসছে। বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে ইসরায়েলের উদ্বেগ এবং মোসাদের কার্যকলাপ তেহরান সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।
ইরানের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা যেকোনো বিদেশি গুপ্তচরচক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না।